গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষা লোন - Grameen Bank Education Loan

আজকের এই পোস্টটিতে আলোচনা করা হবে গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষা লোন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষা লোন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে এই পোস্টটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন।


গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষা লোন

আজকের এই পোস্টটার মেইন কপি গুলো হচ্ছে-

  • গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষা ঋণ কি

  • গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষা ঋণ দেওয়ার কারণ

  • কারা নিতে পারবে গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষা ঋণ

  • গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষা লোনের পরিমাণ

  • গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষা ঋণ নেওয়ার শর্তসমূহ

  • গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষাঋণের উপকারিতা

  • গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষা ঋণ নেওয়ার নিয়ম


গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষা ঋণ কি

বাংলাদেশের টেকনিক্যাল শিক্ষার খাতগুলো যেমন - ডাক্তারি ও ইঞ্জিনিয়ারিং এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য গ্রামীণ ব্যাংক বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে কোর্সের মেয়াদ অনুসারে ৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করে থাকে। একে গ্রামীণ ব্যাংক বলা হয়।



গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষা ঋণ দেওয়ার কারণ

গ্রামীণ ব্যাংক সহজে সকল বেসরকারি ব্যাংকে শিক্ষা ঋন দিয়ে থাকে তাদের মূল উদ্দেশ্য হলো দেশের শিক্ষিত স্বাবলম্বী যুব সমাজ গড়ে তোলা। আমাদের দেশে নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবার গুলোর শিক্ষার্থীরা তাদের উচ্চশিক্ষা নিতে এবং শিক্ষার মাধ্যমে ক্যারিয়ার গড়তে অনেক হিমশিম খায়। অন্যদিকে শিক্ষাই এসব পরিবারে একমাত্র খুঁটি হয়।


কেননা এর বাইরে আয়ের জন্য অন্য অবলম্বন হলো ব্যাবসা যার পুঁজি ছাড়া আগানো সম্ভব না। অন্যদিকে বাংলাদেশ এই ধরনের পরিবারগুলোর ব্যবসায়িক লোন দেওয়ার মত ক্ষমতা নেই বললেই চলে তাই শিক্ষাকে পাথের হিসেবে নিয়ে আগাতে হয়। 


কিন্তু বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার খরচ তুলনামূলক বেশি হলে অনেক শিক্ষার্থী ঝরে যায়, এই ঝরে যাওয়ার রোধ করতে এবং উন্নত শিক্ষিত জনগোষ্ঠী করার উদ্দেশ্যে দেশের সার্বিক কল্যাণে চালু করা হয়েছে গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষা ঋন। যা একজন শিক্ষার্থী ও ছাত্র অবস্থায় শেষ করেই লোন পরিশোধ করতে পারবে। 



কারা নিতে পারবে গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষা ঋণ 

এই ঋণ নিতে পারবে কেবল মেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং ও স্নাতক বিষয়ের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ও এমএ/এমএস/এমবিএ শিক্ষার্থীরা। এছাড়া গ্রামীণ ব্যাংক অন্তর্ভুক্ত ১৭ টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীরা এই লোন নিতে পারবে।



গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষা লোনের পরিমান

এমএস/এমবিএ/এমএ দুই বছর মেয়াদী করছে শিক্ষার্থীরা দুই বছরে সর্বোচ্চ ৩৮ হাজার টাকা, স্নাতক পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা চার বছরে সর্বোচ্চ ৭৭ হাজার টাকা, ইঞ্জিনিয়ারিং চার বছর মেয়াদি কোর্স সর্বোচ্চ ৭৫ হাজার টাকা ও ৫ বছর মেয়াদী এমবিএস শিক্ষার্থীরা সর্বোচ্চ ১ লাখ ৫ হাজার টাকা করে এই ঋণ গ্রহণের সুযোগ পায়।



গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষা ঋণ নেওয়ার শর্তসমূহ

গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষা ঋণ গ্রহণের জন্য বেশ কিছু শর্ত রয়েছে এগুলো হলো-


  • গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষা ঋণ গ্রহণের জন্য অবশ্যই গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্য হতে হবে।

  • সদস্যপদ কমপক্ষে এক বছর হতে হবে।

  • শিক্ষার্থীকে ২০ থেকে ২৫ বছর বয়সী হতে হবে।

  • পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হতে হবে অথবা বিশেষ সেক্টরে অধ্যায়নরত হতে হবে।

  • তবে গ্রামীণ ব্যাংক এই শিক্ষা ঋণ প্রদান করবে যদি কোনো শিক্ষার্থী তার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ২০ থেকে ৫০ শতাংশ টিউশন ফি মওকুফ করা হয়।

  • শিক্ষা জীবন শেষ করে যত ঋণ রয়েছে তা মাসিক কিস্তিতে ভাগ করে পরিশোধ করতে হবে।

  • ঋণ অননুমোদিত হওয়ার তিন মাস পর কার্যকর হবে।

  • শিক্ষাজীবন শেষ হওয়ার পরের মাস থেকে ৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জ দিতে হবে।



গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষাঋণের উপকারিতা

উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে যেহেতু ঋণ আবেদন করা হয় তার যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী তার স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করতে পারেন স্বাচ্ছন্দ্যে। এই শিক্ষাঋণ ছাত্র অবস্থায় পরিশোধ করতে হয় না তাই শিক্ষার্থীর ওপর কোনো বাড়তি চাপ থাকে না কেবল শিক্ষাজীবন শেষ হওয়ার পরের মাস থেকে মাত্র ৫ পার্সেন্ট হারে সার্ভিস প্রদান ও মাসিক কিস্তিতে অল্প অল্প করে পরিশোধ করতে হয়, তাই চাপ কম থাকে। 


এছাড়া এই ঋণের পরিমাণ খুব একটা বেশি না হওয়ায় নিয়মিত কিস্তির মাধ্যমে তাড়াতাড়ি পরিশোধ করা যায়। এই ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্চ শিক্ষার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে, শিক্ষা ব্যয় বহন করার অক্ষমতা কারণে উচ্চ শিক্ষার স্থলে কমেছে ঝরে পড়ার হার।



গ্রামীণ ব্যাংক শিক্ষা লোন নেওয়ার নিয়ম 

গ্রামীণ ব্যাংকে কমপক্ষে এক বছর ধরে সদস্যপদ বিদ্যমান নিম্নতম ২০ বছর বয়সে যে কোন পাবলিক গ্রামীণ ব্যাংক অন্তর্ভুক্ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা গ্রামীণ ব্যাংক অফিসারের কাছে গিয়ে নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করতে পারবে। এক্ষেত্রে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত ও আর্থিক অবস্থায় বিস্তারিত প্রমাণাদি কাগজপত্রসহ দেখাতে হবে। সাধারণত ঋনের আবেদনের তিনমাস পর তা কার্যকর হয়।


উচ্চশিক্ষার জন্য নানা সময় বাধা প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের জন্য গ্রামীণ ব্যাংকের শিক্ষাঋণ একটি সুবর্ণ সুযোগ। অর্থ সঠিক জায়গায় কাজে লাগিয়ে শিক্ষাজীবন শেষ করলে তা পরিবেশ নিশ্চিত তাই আর্থিকভাবে অসচ্ছল উচ্চশিক্ষায় নিয়োজিত শিক্ষার্থীরা এ ঋণ আবেদন করতে পারেন। আশা করছি কিভাবে গ্রামীন ব্যাংক শিক্ষা ঋন নিতে হয় সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post a Comment (0)

নবীনতর পূর্বতন