ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেয়ার নিয়ম - Islami Bank Bangladesh Loan

অধিকাংশ লোক জন বাংলাদেশ ইসলামি ব্যাংক লোন পদ্ধতি সম্পর্কে  পরিস্কার ভাবে জানেন না। বিশেষ করে ইসলামি ব্যাংক লোন নেওয়ার পদ্ধতি অন্যান্য ব্যাংকের চেয়ে ভিন্ন হওয়ার কারণে ইসলামি ব্যাংক থেকে লোন নিতে সমস্যায় পড়তে হয়। তা ছাড়াও ইসলামি ব্যাংকে সুদে বা মুনাফা বিষয়টি নিয়ে সকলের মধ্যে ভিন্ন মতামত থাকার কারনে আরো ঝামেলা হয়। আজকে এ সকল বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করবো। ইসলামি ব্যাংক লোন সেটা হতে পারে ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড অথবা অন্যান্য যে সকল ইসলামি ব্যাংক আসে। সেক্ষেত্রে অনেকে কমপ্লেন আসে তা হচ্ছে আপনে ইসলামি ব্যাংকে লোনের জন্য গিয়েছেন কিন্তু তারা লোন দেয় নি। 


ইসলামী ব্যাংক থেকে লোন নেয়ার নিয়ম


এছাড়া আপনার মনে পশ্ন উঠতে পারে ইসলামি ব্যাংক সুদ খায়, ইসলামি ব্যাংক বড় প্রতারক এগুলো নানা কমপ্লেন আপনে মানুষের কাছ থেকে শুনতে পারেন। আপনে সর্ব প্রথমে একট্ জিনিস মনে রাখবেন যে বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদ যুক্ত এবং বাংলাদেশ ব্যাংক ইন্টারেস্টমেন্ট। তাই বাংলাদেশের অন্যান্য যে সকল ব্যাংক হোক না কেনো সেটা শত ভাগ সুদ মুক্ত না। বর্তমান গোটা বিশ্বের এমন কোথায় কোনো ব্যাংক নেই যেটি শত ভাগ সুদ মুক্ত। বাংলাদেশে যে সকল ইসলামি ব্যাংক আসে তারা তাদের সাধ্যে মতো চেষ্টা করে সুদ মুক্ত থাকার জন্য। 

কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে সেটা কোনো ভাবেই সম্ভব না তবে সকল ইসলামি ব্যাংক সুদ মুক্ত হওয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে। বাংলাদেশ ইসলামি ব্যাংকে কিছু দূর্বলতা আসে সেটা হচ্ছে তারাও অন্যান্য ব্যাংকের মতো লভ্যাংস নেয়  এবং তারা অন্যান্য ব্যাংকের মতো জরিমানা করে এ ধরনের নানা অভিযোগ আসে। তবে আজকে আমরা এ সকল অভিযোগ নিয়ে কোনো আলোচনা করবো না আজকে আমরা আলোচনা করবো ইসলামি ব্যাংক থেকে কি কি পদ্ধতিতে লোন নেওয়া যায়।


ইসলামি ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে কত পর্যন্ত লভ্যাংশ দিতে হবে এবং ইন্টারেস্ট ফি বা ইন্টারেস্টের পরিমাণ কত সেটাও এখানে বলে দেওয়া হবে। আর আপনে কোন ক্ষেত্রে এ লোনটি পেয়ে থাকবেন এবং লোন পাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার কি কন্ডিশন মানতে হবে এবং কি জন্য আপনে লোন পাবেন সবকিছুই বিস্তারিত আলোচনা করবো।  এছাড়াও ইসলামি ব্যাংক লোন  সর্বোচ্চ কত দিনের জন্য পাবেন এবং ইসলামি ব্যাংক থেকে কি কি কাজে আপনে লোনটি পেয়ে থাকবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হবে।


ইসলামি ব্যাংক মূলত ছয় ভাবে ঋন প্রদান করে থাকে। প্রথমে যেটা রয়েছে সেটা হচ্ছে নতুন বাড়ি ক্রয়ের জন্য, তার পরবর্তী রয়েছে নতুন ফ্লাট ক্রয় কিংবা পুরাতন বাড়ি ক্রয় করতে  আপনি ইসলামি ব্যাংক থেকে লোন (ইনভেস্ট) নিতে পারেন। তাছাড়া ইসলামি ব্যাংক আরো তিন ভাবে ঋন প্রদান করে থাকে। নতুন বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে আপনে লোন নিতে পারবেন, ফ্লাট্ নির্মাণের জন্য ঋন নিতে পারবেন এবং বাড়ি সংস্কার ও বর্ধিত করনের জন্যও ঋন নিতে পারবেন।। তাছাড়াও ইসলামি ব্যাংক আরো কয়েকটি খাতে লোন দিয়ে থাকে সেটা হচ্ছে শিল্প, ব্যবসা বানিজ্য, কৃষি ইত্যাদি। আজকে এসকল বিষয় আমরা তুলে ধরবো আজকে এই পোস্টে সুতরাং আপনাদের কাছে অনুরোদ থাকবে পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য।


প্রথমে ইসলামি ব্যাংক হোম লোন


ইসলামি ব্যাংক থেকে যদি আপনে ঋন নেন সেক্ষেত্রে আপনাকে বাড়ি তৈরির সর্বোচ্চ ৩০ লক্ষ এবং সর্বনিম্ন  ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আপনার পিছনে ইনভেস্ট করবে।এছাড়াও আপনার যে বাড়ি আসে সে বাড়ি সংস্কার করার জন্য বর্ধিত করন করতে পারেন। এক্ষেত্রে ইসরামি ব্যাংক আপনাকে সর্বনিম্ন ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ইনভেস্ট করে থাকবে। প্রথমে যেহেতু বলেছি তারা এটাকে সব সময় ইনভেস্ট বলে থাকে কিন্তু তাকে ঋন বলতে তারা রাজি নয়।


ইসলামি ব্যাংকে ঋন পাওযার শর্ত সরকারি কিংবা বেসরকারি চাকরির জন্য এক বছরের ডকুমেন্টস তাদের জমা দিতে হবে অথাত আপনার চাকরি মেয়াদ যতি এক বছর হয় তাহলে আপনে এ লোনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আর আমি আর একটু সহজ করে বলে দিই সরকারি কর্মচারী এবং বেসরকারি কর্মচারীর ক্ষেত্রে ইসলামি ব্যাংকে ঋন পাওয়ার জন্য আপনার চাকরি বয়স সর্বনিম্ন ১ বছর হতে হবে ১ বছর না হলে আপনাকে ইসলামি ব্যাংক থেকে ঋন নিতে পারবেন না। 

যদি আপনে কোনো কারনে ৬ মাস কোনো একটা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন আবার পরের ৬ মাস আরেক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন সেক্ষেত্রে আপনে ইসলামি ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন না। যদি আপনার ক্যাশ সেলারি চাকরি হয় সেক্ষেত্রে আপনাকে সেই ডকুমেন্টস জমা দিতে হবে সেই সেক্ষেত্রে আপনাকে ইসরামি ব্যাংক লোন দিতে পারে।


এছাড়াও ডাক্তার, ইন্জিনিয়ার, শিক্ষক, আর্কিটেকের জন্য সর্বনিম্ন এক বছর একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত হতে হবে তাহলো আপনে এ লোনের আবেদন করতে পারবেন। 


ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যবসার বয়স সর্বনিম্ন এক বছর হতে হবে, যদি আপনে এই কাজটা করে থাকেন তাহলে আপনে ইসলামি ব্যাংক ঋনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। আপনে যদি এক জন ব্যবসায়ী হয়ে থাকেন তাহলে লোন নেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বশেষ ছয় মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট এর দরকার হবে। এছাড়াও ব্যাবসায়ীদের কাছ থেকে যে সকল ডকুমেন্টস নেওয়া হবে সেগুলো হচ্ছে ট্রেড লাইসেন্স, টিন সার্টিফিকেট। 


ইসলামি ব্যাংক থেকে লোন পাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনার ২ জন গ্যারান্টর থাকতে হবে। বাবা - মা, ভাই - বোন, আত্নীয় - স্বজন, বা কাছের মানুষকে আপনি গ্যারান্টর করতে পারবেন। এটা সম্পূর্ণ আপনার একান্ত ব্যাক্তিগত বিষয়। তবে অবশ্যই যারা আর্থিক ভাবে সচ্ছল তাদেরকে গ্যারান্টর করতে হবে। 


ইসলামি ব্যাংক থেকে হোম লোন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার নিজস্ব ব্যক্তি মালিকানার একটা জমি থাকতে হবে কিংবা আপনার পিতার নামে যে কোনো একটা জমি থাকলে হবে। এছাড়াও এখানে দরকার হবে জমির মূল্য দলিল, এখানে সার্টিফাইড কপি গ্রহনযোগ্য হবে না।


প্রাইভেট প্লেটের ক্ষেত্রে:

  • জমির মূল মালিকানা দলিল, বায়া দলিল। 

  • সিএস, এসএ, আরএস, বিএস খতিয়ানের জাবেদা নকল

  • ডিসিআর, খাজনা রশিদ ও নামজারি খতিয়ান

  • জেলা/সাব রেজিষ্ট্রি আফিস কর্তৃক ইস্যুকৃত ১২ ( বার) বছরের নির্দায় সনদ ( এনইসি)।


সরকারি প্লটের ক্ষেত্রে:

  • প্লটের বরাদ্দ পত্র

  • দখল হস্তান্তর পত্র

  • মূল লীজ দলিল ও বায়া দলিল ( প্রয়োজ্য ক্ষেত্রে)

  • লীজ দাতা প্রতিষ্ঠান হতে বন্ধক অনুমতি পত্র

  • হস্তান্তর মূলে মালিক হলে হস্তান্তর অনুমতিপত ও নামজারি, ডিসিআর ও খাজনা রশিদ।


আশাকরি উল্লেখীত সব তথ্য সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন। আর যদি আমাদের আজকের এই পোস্টি যদি আপনার ভালো লাগে অবশ্যই জানাবেন আর যদি আপনার জানা মতে কথাও ভুল তথ্য মনে হয় তাহলে ক্ষমা করে দিবেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post a Comment (0)

নবীনতর পূর্বতন