ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস খোলার নিয়ম - Islami Bank DPS Account Create

অনেকের কাছেই প্রশ্ন ইসলামি ব্যাংক এর ডিপিএস অর্থাৎ ডিপোজিট পেনশন স্কিম একাউন্ট খুলতে গেলে কি কি কাগজপত্র বা ডকুমেন্ট লাগে আজ এ বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।


ইসলামী ব্যাংক ডিপিএস খোলার নিয়ম


ডিপিএস বাণিজ্যিক ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট বলতে কী বোঝায় 

প্রতি মাসের খরচ বাদ দিয়ে যতটুকু বাকি থাকে তা সঞ্চয় করে রাখা দরকার আর টাকা ঘরে থাকলে সেটা নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তা থেকেই যায় এজন্য ব্যাংকে একাউন্ট খুলে টাকা সঞ্চয় করা যেতে পারে ডিপিএস অ্যাকাউন্ট এর উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয় যে কোন ব্যাংকে ডিপিএস অ্যাকাউন্ট খুলে সেখানে নিয়মিত টাকা জমা রাখা যায়।

যেকোনো ব্যক্তি এমনকি প্রতিষ্ঠান এ ধরনের অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে এক্ষেত্রে প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট অংকের টাকা জমা রাখতে হয়। ব্যাংকের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মাসিক কিস্তির পরিমাণ ভিন্ন ভিন্ন পরিমাণ হয়ে থাকে।

সাধারণত ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত মাসিক কিস্তি দেয়া হয়। এ ধরনের অ্যাকাউন্ট পাঁচ বছর ১০ বছর ২০ বছর মেয়াদি হয়ে থাকে। সাধারণত ৫ বছর মেয়াদী ডিপিএস এর জন্য বার্ষিক ১০% আট-দশ বছর মেয়াদী ডিপিএস এর জন্য বার্ষিক ১৫% হারে সুদ প্রদান করা হয়। তবে ব্যাংকে সুদের পরিমাণ ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।

ইসলামি ব্যাংকে ডিপিএস অ্যাকাউন্ট খুলতে যা যা ডকুমেন্ট লাগে তা হল 

ইনলামি ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কিছু কাগজপত্র ও তথ্যের প্রয়োজন হয় কিন্তু সাধারণত প্রায় সব ধরনের ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কিছু কাগজপত্র অবশ্যই দরকার পড়ে।

পূরণকৃত ফরমঃ আপনার পছন্দের শাখা থেকে সংগ্রহ করুন। যদি একাধিক ব্যক্তির নামে অর্থাৎ যৌথ হিসাব হয় তবে ফরমের ব্যক্তি সংক্রান্ত তথ্যাবলী প্রয়োজনীয় সংখ্যক ফটোকপি করে নিন।

স্পেসিসেন সিগনেচার কার্ডঃ অনেক ব্যাংক একাউন্ট খোলার ফরম এর সাথে দিয়ে দেয়। এতে ব্যাংক অফিসারের সামনে একাউন্ট হোল্ডার স্বাক্ষর করবেন।

পরিচয়দানকারীঃ অর্থাৎ প্রডিউসার সাধারণত ওই ব্যাংকের কোন গ্রাহক পরিচয়দানকারী হবেন। পরিচয়দানকারী একাউন্ট ফরম এর নির্ধারিত স্থানে নমুনা স্বাক্ষর নাম-ঠিকানা অ্যাকাউন্ট নম্বর ইত্যাদি লিখবেন এবং একাউন্ট পরিচালনাকারী ফটোগুলি সত্যায়িত করবেন। তিনি একাউন্ট খলার দিকে উপস্থিত না হলেও চলবে।

ফটোঃ একাউন্ট পরিচালনাকারী প্রত্যেক ব্যক্তির দুই কপি পাসপোর্ট সাইজ ফটো লাগবে এই ফটোগুলো পরিচয়দানকারী কর্তৃক সত্যায়িত হতে হবে নমিনীর ১ কপি ছবি লাগবে যা হিসাব পরিচালনাকারী কর্তৃক সত্যায়িত হবে নমিনি কেবলমাত্র ব্যক্তিগত একাউন্টে ১০ মিনিট প্রদান করা যাবে এবং করতেই হবে প্রাতিষ্ঠানিক একাউন্টে দেয়া যায় না নমিনির স্বাক্ষর প্রয়োজন নেই তবে নাম-ঠিকানা দিতে হবে তুমি নিজেকে পরিচয় পত্র দিলে ভালো হয়।

টাকাঃ নির্ধারিত জমা স্লিপ পূরণ করে টাকা জমা দিতে হবে ডিপিএস এর জন্য খিস্তি সমপরিমাণ টাকা লাগবে অন্যান্য কাগজপত্র একাউন্ট পরিচালনাকারী প্রত্যেক ব্যক্তির পরিচয় পত্রের ফটোকপি লাগবে এক্ষেত্রে জাতীয় পরিচয় পত্র উপকমিশনার বাবা চেয়ারম্যান কর্তৃক প্রদত্ত নাগরিক সনদ সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য মুক্তকরণ উপস্থিতিতে ড্রাইভিং লাইসেন্স জন্মসনদ চাকরি পরিচয় পত্র আইডি কার্ড ইত্যাদি থেকে যেকোনো দুইটি উপস্থাপন করতে হবে।

বিবিধঃ সকল প্রকার প্রতিষ্ঠান একাউন্ট এর ক্ষেত্রে যা যা অতিরিক্ত লাগবেঃ

১) প্রত্যেক অ্যাকাউন্ট পরিচালনা কারীর নাম পদবীসহ সিল।

২) ট্রেড লাইসেন্স। 

৩) প্রতিষ্ঠানটি একক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান না হলে রেজুলেশন লাগবে যাতে থাকে নির্দিষ্ট ব্যাংকের নির্ধারিত শাখায় একাউন্ট খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত এবং একাউন্টটিকে পরিচালনা করবে তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত। রেজুলেশনে পর্ষদ / বোর্ড/ গভর্নিং বডির সদস্যরা স্বাক্ষর করবেন।

উক্ত কাগজপত্র ছাড়া ও মাঝে মাঝে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন কাগজপত্র তথ্যাবলী প্রয়োজন পড়ে 

যেমন সমিতির গঠনতন্ত্র ও রেজিস্ট্রেশন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনুমোদনপত্র এনজিও ব্যুরো হতে লাইসেন্স প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির জন্য সার্টিফিকেট অফ ইন্সরপরেশন মেমোরান্দুম অফ অ্যাসোসিয়েশন আর্টিকেল অফ অ্যাসোসিয়েশন পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির জন্য সার্টিফিকেট অফ ইন্সরপরেশন মেমোরান্দুম অফ অ্যাসোসিয়েশন আর্টিকেল অফ অ্যাসোসিয়েশন সার্টিফিকেট অফ কমেন্সমেন্ট অফ বিজনেস ইত্যাদি।

বিভিন্ন ধরনের ব্যাংক একাউন্ট খুলতে কিছু জিনিস অবশ্যই দরকার ভুলে গেলে চলবে না অর্থাৎ সব একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য সংযুক্ত সকল কাগজের মূলকপি সাথে রাখবেন একাউন্ট খোলার দিন ও প্রথম বার চেকবইয়ের উঠানো দিন আপনাকে অবশ্যই নিজে যেতে হবে আপনার বর্তমান ঠিকানায় ব্যাংক থেকে চিঠি আসতে পারে বিষয়টি অবশ্যই খেয়াল রাখবেন তোলার জন্য নির্ধারিত ফরমে আবেদন করে নিবেন জমা স্লিপ নাম্বার সংরক্ষণ করবেন যাতে হারিয়ে না যায় আপনার নামের বানান সঠিক ভাবে তোলা হল ত্যাগ করে নিন ডেবিট কার্ড নেওয়ার জন্য আলাদাভাবে আবেদনের প্রয়োজন থাকলে তাও করে নিন।

ইসলামি ব্যাংক ডিপিএস এর বিস্তারিত তথ্যঃ

সুস্থ মস্তিষ্ক সম্পন্ন যেকোনো প্রাপ্তবয়স্ক বাংলাদেশী নাগরিক নিজ নামে মুদারাবা মাসিক সঞ্চয় প্রকল্প হিসেবে খুলতে পারবেন। নাবালক নাবালিকা নামেও তার পিতা অথবা মাতার অথবা বৈধ অভিভাবকগণ হিসেবেই খুলতে পারবেন অর্থাৎ যার ১৮ বছর বয়স হয়নি তার নামে এই হিসেব করতে পারবেন। প্রত্যেক নারীকে প্রতি মাসের পহেলা তারিখ ২৩ তারিখের মধ্যে মাসিক কিস্তির অর্থ জমা করতে হবে। 

অর্থাৎ আপনাকে প্রতি মাসের ১ তারিখ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত এডিএসএল কিস্তি জমা করতে পারবেন। অর্থাৎ একমাস সময় এক মাসের মধ্যে যে কোনোদিন এই ডিপিএস এর অর্থ জমা করতে পারবেন মাসের শেষ তারিখ যদি সরকারি ছুটির দিন হয়ে থাকে তাহলে তার পূর্ববর্তী কার্যদিবসের অর্থ জমা করতে হবে। অর্থাৎ যে মাসের কিস্তিতে মাসের মধ্যেই জমা করতে হবে গ্রাহক ইচ্ছা করলে অগ্রিম কিস্তি জমা দিতে পারবেন। তবে সেক্ষেত্রে আপনাকে অগ্রিম কিস্তির জন্য ব্যাংক থেকে লভ্যাংস দেয়া হবে।

অনন্য অনেক ব্যাংকে দেয়া হয় না ইসলামী ব্যাংকে সুবিধাটা দেয়া হয়ে থাকে অগ্রিম কিস্তির জন্য ইন্টারেস্ট দেয়া হয়ে থাকে। অন্যান্য কোন ব্যাংকের সেটা দেয়া হয় না এর মেয়াদ তিন বছর ৫ বছর ১০ বছর মেয়াদ পূর্তির পূর্বে যদি আপনি এই ডিপিএসটি ভেঙে ফেলতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে যেভাবে লভ্যাংশ দেয়া হবে। সেগুলো হলোঃ ১ বছরের যদি কম হয় তাহলে কোন ধরনের মুনাফা দেয়া হবে না। অর্থাৎ আপনি ডিপিএস করার পর এক বছর পূর্বে যদি আপনি ডিপিএস বন্ধ করে দিতে চান তাহলে আপনাকে কোন ধরনের মুনাফা দেয়া হবে না। 

এক বছরের উপরে হলে আপনাকে মনে হয় দেয়া হবে এক বছরের বেশি কিন্তু তিন বছরের কম হলে সঞ্চয় হিসেবে আপনাকে লাভ মুনাফা দেয়া হবে। এক বছর পূর্ণ হয়েছে ধরুন আপনি তিন বছর মেয়াদী ডিপিএস করেছেন এক বছর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পরে। আর পিএইচডি ভেঙ্গে ফেলতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে সঞ্চয় হিসেবে লাভের হার দেয়া হবে সঞ্চয়ী হিসাব সেভিংস একাউন্টে টাকা জমা রাখার পর প্রতি ৬ মাস যেভাবে আছে তাকে সেভাবে আপনাকে দেয়া হবে তবে সেটা খুবই কম পরিমাণে দেয়া হয়ে থাকে। 

তিন বছরের বেশি কিন্তু পরবর্তী মেয়াদপূর্তি হয়নি সে ক্ষেত্রে তিন বছর মেয়াদী ডিপিএস  এর লভ্যাংশ দেয়া হবে। ধরুন আপনি ৫ বছর মেয়াদী ডিপিএস করেছেন তিন বছর পূর্ণ হওয়ার পরে ভেঙ্গে ফেলবেন। সে ক্ষেত্রে তিন বছরের জিডিপি এস রয়েছে সেখানেই আপনাকে লভ্যাংশ দেয়া হবে, পাঁচ বছরের হারে আপনাকে লভাস দেয়া হবে না। কারণ আপনি তিন বছর পরে ভেঙ্গে ফেলছেন, আর যদি চার বছর পরে আপনি ভেঙে ফেলতে চান তাহলে তিন বছরের পূর্ণ প্যাকেজ হিসেবে আপনারা লভ্যাংশ দেয়া হবে। 

আর এক বছরের জন্য সেটিংস আরে আপনাকে লভ্যাংশ দেয়া হবে পাঁচ বছরের বেশি কিন্তু পরবর্তী মেয়াদ পূর্ণ হয়নি। অর্থাৎ পরবর্তী মেয়াদ ১ বছর তিন বছর ৫ বছর এবং ১০ বছর মেয়াদী ডিপিএস করা হয় তাহলে পরবর্তী মেয়াদ ১০ বছর। ১০ বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্বে যদি আপনি এই পেইজটি ভেঙে ফেলতে চান তাহলে আপনাকে পাঁচ বছর পূর্ণ হয়ে থাকে তাহলে ৫ বছর হারে লভ্যাংশ দেয়া হবে।

আর যদি পাঁচ বছরের বেশি হয়ে থাকে ৬ বছর হয়ে থাকেন তাহলে এক বছরের জন্য সঞ্চয় হিসেবে আপনাকে সংসদে হবে সেটা খুবই কম পরিমাণে দেয়া হবে। কিন্তু পাঁচ বছরের জন্য আপনি অন্য পাঁচ বছরের প্যাকেজ হিসেবে যোগ দেয়ার কথা ছিল সেটাই আপনাকে দেয়া হবে। ইসলামী ব্যাংক প্রতি মাসে সর্বনিম্ন ১০০০ টাকা করে জমা করতে পারবেন এবং সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জমা করতে পারবেন। তবে ১০০০ টাকার গুণিতক হতে হবে যেমন ১০০০ টাকা ২০০০ টাকা ৩০০০ টাকা এভাবে ১০০০ টাকা জমা করতে হবে। তবে আপনি ১৫০০ টাকা জমা করতে পারবেন না বা ১৪০০, ১৩০০ টাকা এভাবে আপনি জমা করতে পারবেন না।

এই কথাগুলো বলার মূল আকর্ষণ হলো ডিপিএস এর তিন বছর মেয়াদী ডিপিএস লাভের হার আপনাকে দেওয়ার পয়েন্ট ২, ৫ বছর মেয়াদী ডিপিএস করে থাকেন। তাহলে আপনাকে দেয়া হবে ৪, ৫, ১০ বছর মেয়াদ কাল থাকে তাহলে আপনাকে লাভ দিতে পারে। 

তবে যেহেতু এটি ইসলামী ব্যাংক এখানে লাভের হার নির্ধারিত নয় এটা শুধুমাত্র আপনাদের কে দেখানোর জন্য যেকোনো সময় পরিবর্তন হতে পারে। যেহেতু ইসলামী ব্যাংকের টাকা দিয়ে তারা যে মুনাফা করবে সেখান থেকেই একটি অংশ আপনাকে দেয়া হবে। সে কারণেই নির্ধারিত নির্ধারিত হলে সেটা সুদের মধ্যে পড়ে যাবে তাহলে সেটা নির্ধারিত নয়। সুতরাং যেকোনো সময় পরিবর্তন হতে পারে এটা নির্ধারিত নয়। ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড ডিপিএস নিয়ে আজ এই পর্যন্ত আশা করি বিষয়টি আপনাদের বুঝাতে পেরেছি।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post a Comment (0)

নবীনতর পূর্বতন